দিল্লির পাঠান মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন বলিউড খ্যাত এস আর কে শাহরুখ খান। অনানুষ্ঠানিকভাবে এসআরকে হিসাবে ডাকা হয়, একজন বিখ্যাত ভারতীয় অভিনেতা, প্রযোজক, টেলিভিশন উপস্থাপক এবং মানবপ্রেমিক। ১৯৮০ এর শেষের দিকে বেশ কিছু টেলিভিশন সিরিয়ালে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেন।তিনি এখন আমাদের সকলের মনে বিরাজ করেন। চলুন দেখেনি তার এই সাফল্যের পেছনে দুঃখ জনক ইতিহাসটি।
১। ১৯৬৫ সালে একটি মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন পিতা নতুন দিল্লি, ভারতের পাঠান বংশদ্ভুত। তাঁর পিতা তাজ মোহাম্মদ খান একজন ভারতীয় স্বাধীনতা কর্মী ছিলেন। খানের মতে, তার দাদা ছিল প্রকৃতভাবে একজন আফগানিস্তান নাগরিক। তাঁর মা, লতিফ ফাতিমা, ছিল মেজর জেনারেল শাহ নওয়াজ খান জানজুয়া রাজপুত জাতি।
২। ১৯৮৮ সালে ফৌজী টেলিভিশন সিরিয়ালে কমান্ডো অভিমন্যু রাই চরিত্রের মাধ্যমে অভিনেতা হিসেবে তিনি আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর ১৯৮৯ সালে সার্কাস সিরিয়ালে তিনি কেন্দ্রীয় ভূমিকায় অভিনয় করেন, যেটি ছিল একজন সাধারণ সার্কাস অভিনেতার জীবন নিয়ে রচিত। তার পিতা-মাতার মৃত্যুর পর নতুন জীবন শুরু করার লক্ষ্যে শাহরুখ নয়াদিল্লী ছেড়ে মুম্বাই পাড়ি জমান।
৩। ফৌজীতে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি হেমা মালিনীর চোখে পড়েন যিনি শাহ রুখ খানকে তার অভিষেক ছবি দিল আশনা হ্যায়তে অভিনয়ের সুযোগ দেন। দিওয়ানা ছবির মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্রের জগতে যাত্রা শুরু করেন। এ ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন দিব্যা ভারতী। ছবিটি ব্যবসাসফল হয় এবং তিনি বলিউডে আসন গাড়তে সক্ষম হন। আসলে তার প্রথম ছবি হওয়ার কথা ছিল দিল আশনা হ্যায় কিন্তু দিওয়ানা প্রথমে মুক্তি পায়। একই বছরে
তিনি আরও কিছু ছবি যেমন চমৎকার, বিতর্কিত আর্ট ফিল্ম মায়া মেমসাবে অভিনয় করেন। আসলে তার প্রথম ছবি হওয়ার কথা ছিল দিল আশনা হ্যায় কিন্তু দিওয়ানা প্রথমে মুক্তি পায়। ১৯৯৪ সালে তিনি আঞ্জাম ছবিতে অভিনয় করেন যেটি ব্যবসাসফল হয়নি। তবে সাইকোপ্যাথ হিসেবে তার অভিনয় সমাদৃত হয় এবং তিনি ১৯৯৫ সালেফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ ভিলেন পুরস্কার লাভ করেন।
৪। ১৯৯৩ সালে বাজীগর ও ডর ছবিতে খলচরিত্রে অভিনয় করে তিনি বিপুল খ্যাতি পান। ডর ছবিতে শাহরুখ একজন অপ্রকৃতস্থ প্রেমিক এর ভূমিকায় অভিনয় করেন, ছবিটি খুব সাফল্য লাভ করে এবং তিনি তারকা খ্যাতি পান। বাজিগর ছবির জন্য তিনি তার ক্যারিয়ারের প্রথম ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পুরস্কার লাভ করেন। এর মধ্যে আটটিই সেরা অভিনেতার পুরস্কার। তিনি বলিউডের অন্যতম সফল অভিনেতা। হিন্দি চলচ্চিত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য ২০০২ সাল ভারত সরকার শাহরুখ খানকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে।
৫। ১৯৯৫ ছিল তার জন্য খুব সাফল্যের বছর। দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে বক্স অফিস রেকর্ড ভাঙ্গ এবং এর সব কৃতিত্ব পান তিনি। ছবিটি ৫২০ সপ্তাহের বেশি প্রদর্শিত হয়। ভারতের সর্বাধিকবার প্রচারিত ছবি হিসেবে যাকে তুলনা করা যায় শোলের সাথে যা ২৬০ সপ্তাহ চলেছিল। ছবিটি বর্তমানে বারো বছর ধরে প্রদর্শিত হচ্ছে এবং প্রায় ১২ বিলিয়ন রুপির চেয়েও বেশি অর্থ আয় করেছে। এইভাবেই তিনি হয়ে উঠেছেন আমাদের স্বপ্নের নায়ক॥